বইটির ভূমিকায় লেখক যা বলেছেন:
এ রচনা পুরোপুরি আত্মজীবনী নয়- বড় জোর একে স্মৃতিকথা বলা যায়। মন থেকে যা আজো হারিয়ে যায়নি তাই শুধু ধরে রাখার চেষ্টা হয়েছে এখানে। চিঠিপত্র যা এখনো হাতের কাছে আছে যথাস্থানে তার উদ্ধৃতি দিয়েছি। নিজের সম্বন্ধেও কেউ সব কথা বলতে পারে না। প্রত্যেক মানুষেরই একটা নিজস্ব এলাকা আছে, ইংরেজিতে যাকে Private life বলা হয়। সেখানে ছাপার অক্ষর কেন, দেবতারও প্রবেশ নিষেধ।
কোন লেখককেই, সামাজিক দিক থেকে খুব আদর্শ-চরিত্র মনে করা ঠিক নয়- তাঁদের পেশাই তাঁদের এ পথের অন্তরায়। গল্প-উপন্যাস লিখতে গেলে লেখকের ব্যক্তিত্ব শতধা হতে বাধ্য, সৎ-অসৎ সব রকম চরিত্রে চরিত্রে মানসবিহার তাঁর পক্ষে অনিবার্য। কোন কোন ক্ষেত্রে দেহের ব্যাপারেও এ বিহার যে প্রশ্রয় পায় না তা নয়, এমন কি 'মহৎ' আখ্যায়িতরাও এ ব্যাপারে ব্যতিক্রম নন্। সবাই জানে প্রেমের ব্যাপারে কবি-শিল্পীরা তেমন নির্ভরযোগ্য নয়। তাই সাধারণত বুদ্ধিমতীরা কবি-সাহিত্যিকদের প্রেমে পড়েন না, বিয়েতে তো আরো বেশি গররাজি। তাঁরা লাভ লোকসান হিসেব করেই পা বাড়ান আর রানী হতে চান সব জায়গায় অথচ, কবি-সাহিত্যিকরা কোন রাজা কি রাণীর প্রজা হতে অনিচ্ছুক। তাই সাহিত্যিক-শিল্পীর বেলায় আদর্শ-চরিত্র কথাটার তেমন কোন সামাজিক মূল্য নেই। ইংরেজিতে সার্বিক অর্থে যে character শব্দটি ব্যবহার হয় সাহিত্যিক-শিল্পীদেরও বিচার সে অর্থেই করা উচিত। তাই লেখক হিসেবে আমার কোন ক্যারেক্টার আমার রচনায় ফুটে উঠেছে কিনা সেটা বিচার্য। সামাজিক মানুষ হিসেবে আমি আদর্শ কিনা আমার সাহিত্য-কর্মের বিচারে তা গৌণ। 'আদর্শ' ও 'মহৎ' হওয়া নিঃসন্দেহে গৌরবের আমি কিন্তু জীবনে ও সাহিত্যে 'সত্য' হতে চেয়েছি।
বইটি পড়তে বা ডাউনলোড করতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন...
No comments:
Post a Comment