Pages

Thursday, November 21, 2024

যাও পাখি - শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

খুনে ডাকাত বহেরু একখানা গাঁ তৈরি করেছিল। নিজেই তার নাম রেখেছিল বহেরু গাঁ। সেখানে মানুষের চিড়িয়াখানা তৈরি করেছে সে। যত কিম্ভূত মানুষ ধরে এনে আশ্রয় দিত সেই বহেরু গাঁয়ে। সংসারে বনিবনার অভাবে একদা এই গাঁয়ে চলে এলেন ব্রজগোপাল। এ-সংসারে কিছু চাওয়ার নেই তাঁর। ডায়েরির সাদা পাতায় তবু তিনি লিখে রেখেছিলেন--ভগবান, উহারা যেন সুখে থাকে। নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া মানবিক মূল্যবোধ ও দিশাহীনতার মাঝখানে দাঁড়িয়ে ব্রজগোপাল কি এক অসংশয়িত উত্তরণের স্বপ্ন দেখেছিলেন? সংসার-উদাসী বাবার খোঁজে বহেরুতে এসেছিল সোমেন। বাবার রোজনামচায় লেখা ওই পঙক্তি-রহস্য বুকে নিয়ে সে কলকাতায় ফিরে গেল। বহেরু গাঁ থেকে ফিরে তাকে যেতে হলই, কেননা প্রত্যেক মানুষেরই একটা ফেরার জায়গা চাই। যদিও সেই কলকাতায়, যেখানে অন্যরকম জীবন, হাজার রকম মানুষ। গ্রাম ও কলকাতা--এই দুই বৃত্তের টানাপোড়েন এবং সংলগ্নতায় সৃষ্ট এই কাহিনী নিষ্ঠুর সময়ের অভিঘাতে পীড়িত ব্যক্তিসত্তার সম্পূর্ণ অ্যালবাম। এর বর্ণাট্য বিস্তারে, ঘাত-প্রতিঘাতে, বিরহ-মিলনে অসংখ্য ছবির মধ্যে জগৎ ও জীবন উৎকীর্ণ হয়ে আছে। এক মহৎ উপন্যাসের নাম ‘যাও পাখি’।




Sunday, November 17, 2024

উত্তরাধিকার - সমরেশ মজুমদার

দুই বাংলার জনপ্রিয় লেখক সমরেশ মজুমদারের অসাধারণ এক সৃষ্টি ‘উত্তরাধিকার’ উপন্যাস। প্রথমে এই উপন্যাসটি কলকাতার ‘দেশ’ পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হতো, যা পরে বই আকারে বের হয়। বইয়ের মূল চরিত্র অনিমেষ। ‘উত্তরাধিকার’ অনিমেষের শৈশব থেকে তারুণ্যে পদার্পণের গল্প।


অনিমেষের রাজনৈতিক মতাদর্শের সূচনাটা মূলত এই বইতেই। এর ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময়ে সমরেশ মজুমদার লিখেছেন কালবেলা ও কালপুরুষের মতো কালজয়ী উপন্যাস। ‘উত্তরাধিকার’ উপন্যাসের পটভূমিতে রয়েছে ডুয়ার্সের চা বাগান এবং জলপাইগুড়ি শহর।


শান্ত নিরিবিলি স্বর্গছেঁড়া চা বাগান, ওপারে খুঁটিমারির জঙ্গল, এপারে আঙরাভাসা নদী, মাথার ওপরে ভুটানের পাহাড় থেকে ভেসে আসা বিষণ্ন মেঘের দল, মাঠ পেরিয়ে আসাম রোড, মদেসিয়া কুলিদের লাইন এই সব কিছু জুড়েই অনিমেষের শৈশব। ‘উত্তরাধিকার’ নিয়ে কিছু বলার শুরুতেই স্বর্গছেঁড়া চা বাগানের এই প্রশান্ত রূপটা চোখের সামনে ছবির চেয়েও বাস্তব রূপে দৃশ্যমান হয়ে উঠবে।


চা বাগানের রাস্তায় ছুটে বেড়ানো শিশু অনিমেষ একটু একটু করে বড় হতে থাকে। চা বাগানের ব্রিটিশ কোম্পানিতে চাকরি করা তার দাদা সরিৎশেখরের পরিচিতির সুবাদে সেও চা বাগানে বড়বাবুর নাতি বলেই পরিচিত। তখন ছিল এক অস্থির সময়, যখন সবেমাত্র ভারতবর্ষ স্বাধীনতা পেয়েছে। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট স্কুলে অনিমেষের হাতেই প্রথম পতাকা উত্তোলন হয়। শিশু অনিমেষের মনে দেশপ্রেমের বীজ বপনের শুরু সেখানেই।


অনিমেষকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দাদা সরিৎশেখরের, যা উত্তরবঙ্গের এই স্বর্গছেঁড়ার চা বাগানে পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই অবসরগ্রহণের পর বিধবা মেয়ে হেমলতা ও অনিমেষকে নিয়ে জলপাইগুড়ির নতুন বাড়িতে শুরু করেন নতুন জীবন। জলপাইগুড়ি- যেখানে অনিমেষ বাস্তবতার প্রথম স্বাদ পায়। চা বাগানের স্নিগ্ধ পরিবেশে জন্মানো ও শৈশব কাটানো কোমল হৃদয়ের অনিমেষ যেন ঘোরের মধ্যে চলে যায়। সবচেয়ে আপন মানুষ মা মাধুরী, যার কাছে ছোট্ট অনিমেষ অকপটে সব বলতে পারত, আর বাবা মহীতোষ, যার সঙ্গে আপাত দূরত্বের সম্পর্ক, অবাঙালি ঝাড়িকাকুর স্নেহ, ভবানী মাস্টার, বিশু বাপীর সঙ্গে ছুটে বেড়ানো, খেলার সাথী সীতা, যাকে অনিমেষ মনের মধ্যে গোপনে ধারণ করে- সবকিছুকে পেছনে রেখে জলপাইগুড়ি শহরে গিয়ে নতুন জীবন শুরু করে অনিমেষ।


নতুন জীবনের শুরুতেই ঘটে দুর্ঘটনা। অনিমেষের মা মাধুরীর অকাল মৃত্যুতে সবাই তখন দিশেহারা। ফেলে আসা স্বর্গছেঁড়ার স্মৃতির তাড়না আর মায়ের শূন্যতায় পিসিমার আঁচলে সর্বোচ্চ আশ্রয় পায় অনিমেষ। দাদুর কঠোরতা ও দৃঢ়তার আদর্শের মাঝে একটু একটু করে এগিয়ে চলে সে।


পরিচিত হতে থাকে নতুন নতুন চরিত্রের সাথে৷ রম্ভা, উর্বশী, মেনকা, মুভিং ক্যাসেল, তপুপিসী- এমন বিচিত্র সব নারীর সংস্পর্শে আসে, যারা সবাই কাছাকাছি থেকেও ভিন্ন জীবনধারার ভিন্ন মতাদর্শের এবং তারা সবাই তার জীবনে শিক্ষণীয় প্রভাব ফেলে৷ বিরামবাবু, নিশীথবাবু, প্রিয়তোষ- যাদের কাছে তার রাজনীতির হাতেখড়ি, রাজনীতির আড়ালের রূপ দেখা। স্কুলের বন্ধু মন্টু, তপন- যাদের কাছ থেকে জীবনের অনেক অপ্রিয় বিষয়ের ধারণা পায় সে। অনিমেষ তার নতুন পরিবেশ আর জীবনের বয়ঃসন্ধিতে এসে যেন একসাথে বহু বিষয়ের প্যাঁচে পড়ে যায়। নারী-পুরুষের সম্পর্ক, পারিবারিক কলহ, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, রাজনীতি সব কিছুর ছোঁয়া একসাথে পেতে শুরু করে কিশোর অনিমেষ।


অবশেষে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, যার জন্য এত দিনের অপেক্ষা! বাস্তবতার নিষ্ঠুর ধাক্কায় উপন্যাসের শেষ পর্যন্ত কিশোর থেকে তরুণ হয়ে ওঠে অনিমেষ, আছড়ে পড়ে কলকাতার উত্তাল রাজপথে, যেখানে আগামী দিনের জন্য সবার অধীর অপেক্ষা।


স্বর্গছেঁড়া-জলপাইগুড়ি-কলকাতা। লেখক দক্ষতার সাথে অনেকগুলো জায়গা জুড়ে বিস্তৃত বিপন্ন অস্থির উত্তাল এক সময়ের গল্প বলে গেছেন, অনিমেষের বেড়ে ওঠার গল্প বলেছেন।


জন্ম থেকেই পরিবারের যে মানুষগুলোকে ঘিরে অনিমেষ বড় হয়েছে, কালের পরিক্রমায় জীবনের বাঁকে বাঁকে তাদের নিজেদের মধ্যকার বাঁধন আলগা হয়েছে, অনেকে সেই জীবন থেকে হারিয়ে গেছে, কেউ সাময়িকভাবে কেউ বা চিরতরে। যারা আছে ক্লান্তি এসে ভর করেছে তাদের প্রত্যেকের উপর। বুকে আগলে তিলতিল করে মানুষ করেছেন যারা অনিমেষকে, সময়ের সাথে তাদের পরিবর্তন খুব চোখে পড়ার মতো - শেষকালে এসে বিষণ্ন, জরাগ্রস্ত, অতীত জীবনের নেশায় বুঁদ তারা এক অজানা অপেক্ষায়। পরিবারের বাইরে গিয়েও অন্য যেসব চরিত্র তারা কেউই অপ্রয়োজনীয় নয়। চরিত্রগুলোর স্থায়িত্ব স্বল্প সময়ের জন্য হলেও প্রতিটি চরিত্র অনুভূতির ভেতর নাড়া দিয়ে যায়।


রাজনীতি নিয়ে আছে অনেক আলোচনা অনেক দ্বিধাদ্বন্দ অনেক ঘৃণা অনেক সম্ভাবনা, যদিও সব কিছু অনিমেষের অনভিজ্ঞ চোখ দিয়েই দেখতে হবে এবং তার কৌতূহল আর দ্বিধাদ্বন্দে ভোগা মন দিয়েই পড়তে হবে৷ কংগ্রেস আর কম্যুনিস্ট পার্টি, তৎকালীন বড় বড় নেতাদের প্রভাব, বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর গোপন মিটিং, সংগ্রাম, ক্ষমতায় থাকা দলের দেশের স্বাধীনতা রক্ষার চেষ্টা সব কিছু মিলে যেনো তালগোল পাকিয়ে যায় অনিমেষের সাথে পাঠকেরও।


অনিমেষ নিজেকে বারবার নিজের প্রশ্নের সম্মুখীন করে। বুকের ভেতর ফুলে ফেঁপে উঠা যে দেশপ্রেম সেটি প্রমাণের শ্রেষ্ঠ উপায় কি শুধুই নির্বিকার থাকা? নাকি নিজের দেশপ্রেমের উর্ধ্বে গিয়ে দেশপ্রেমের সাথে স্বার্থকে গুলিয়ে ফেলে তা তুলে ধরার চেষ্টায় নীতিনৈতিকতা বিসর্জন দেওয়া! এইসব প্রশ্নের দোলাচলে পরিচিত কিছু মানুষকেই যেন মাঝে মাঝে অপরিচিত বলে মনে হয়।


এসব প্রশ্ন শুধু অনিমেষের নয়, পাঠকের মধ্যেও জাগ্রত হতে বাধ্য। যে পরিস্থিতির মধ্যে অনিমেষ নিজেকে আবিষ্কার করে, সেটি অপরিচিত নয়। কারণ, জীবনের কোনো একপর্যায়ে আমরা সবাই এই পথ অতিক্রম করি। লেখকের স্বতঃস্ফূর্ত লেখায় ধাপে ধাপে ছোট ছোট ঘটনার উপর ভিত্তি করে উঠে আসে অনিমেষের মানবিক গুণাবলির চর্চা, ভালো মন্দের পার্থক্য করতে শেখা, নিজের একটি পরিচয় গড়ে তুলবার প্রচেষ্টা, ঘাবড়ে গিয়েও বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা অর্জনে পিছু হটে না অনিমেষ। এই কাহিনী এক তরুণের আত্মজিজ্ঞাসার কাহিনী, আত্ম-অনুসন্ধানের কাহিনী।


রিভিউটি লিখেছেন হাকিম মাহি, শিক্ষার্থী, লোকপ্রশাসন বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।





Sunday, November 10, 2024

পূর্ব-পশ্চিম - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

দেশবিভাগ নিয়ে তেমন স্মরণীয় উপন্যাস বাংলাভাযায় লেখা হয়নি। দু-পার বাংলায় ছড়ানাে সমান্তরাল বাঙালিজীবন নিয়েও না। সেই অপূর্ণতাকেই দূর করল এই বিশিষ্ট, ব্যতিক্রমী ও বড়-মাপের উপন্যাস।


দুই বাংলার দুই পরিবারকে কেন্দ্র করে রচিত এই উপন্যাসে বিশেষ কোনও চরিত্রকে মূল চরিত্র বলা যাবে না। একই সঙ্গে অনেকগুলি প্রধান চরিত্র। এইসব চরিত্রের কেউ-কেউ আবার পূর্ব বা পশ্চিম বাংলার গণ্ডিতেই আবর্তিত নয়, আমেরিকাতেও গেছে। ফলে, কলকাতার কফি হাউসের পাশাপাশি কখনও আবার আমেরিকার চোখ-ধাঁধানাে শহরের কথা এই উপন্যাসে। পূর্ব-পশ্চিমএই নামকরণেও যেন নিহিত ত্রিমাত্রিক ব্যঞ্জনা। এ-উপন্যাসে শুধুই পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার কথা নয়। পূর্ব গােলার্ধ ও পশ্চিম গােলার্ধের বৃহত্তর পটভূমিও এর অন্তর্গত। আবার মানুষের জীবন ও মনে যে পূর্ব ও পশ্চিম, তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও উত্থান-পতন, সূচনা ও দিনাবসানতাও যেন সূক্ষ্মভাবে প্রতিফলিত এই নামকরণে। 'সেই সময়'-এর লেখকের কলমে এই সময় নিয়ে লেখা 'পূর্ব-পশ্চিম' বাঙালি জীবনের আধুনিক গদ্য মহাকাব্য।

Saturday, November 9, 2024

প্রথম আলো - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে যে-কোনও সমাজের মাঝেমাঝে ঐতিহ্য ও ইতিহাসের দিকে পিছু ফিরে দেখা দরকার। আমাদের দেশের অনতি-অতীতের পুনর্দর্শন ও পুনর্বিচার নিয়েই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বর্ণাঢ্য, বেগবান উপন্যাস ‘প্রথম আলো’।


উপন্যাসটিতে আছেন রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, জগদীশচন্দ্র বসু, ভগিনী নিবেদিতা, অবনীন্দ্রনাথ, গিরিশচন্দ্র ঘোষ, অর্ধেন্দু মুস্তাফীর মত খ্যাতনামা সব ঐতিহাসিক চরিত্র।


তা সত্ত্বেও ‘প্রথম আলো’র মূল নায়ক- সময়। আঠারোশো তিরাশি থেকে উনিশশো সাত পর্যন্ত যে-সময়কাল বিস্তৃত। যখন হঠাৎ যেন ঘুম ভেঙে নবজাগরিত কিছু মানুষ আবিষ্কার করছে দেশ নামের এক ভাবসত্তাকে, অনুভব করছে পরাধীনতার গ্লানি। রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের ধর্ম আন্দোলন, মহেন্দ্রলাল সরকারদের বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাধারা, পেশাদারি রঙ্গমঞ্চ ও প্রবাদপ্রতিম শিল্পীদের ভূমিকা, রবীন্দ্রনাথের কবিজীবনের নানা রূপান্তর, কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে নবীনদের মতবিরোধ, সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের সূচনা, দুর্ভিক্ষ, মহামারী, হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ভেদরেখা সৃষ্টি ইত্যাদি ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ অনুপুঙ্খভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে ‘প্রথম আলো’ উপন্যাসে।


মহাকাব্যিক ব্যাপ্তি ও বিশালতা নিয়ে এই উপন্যাসে কাহিনি পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্য থেকে ছড়িয়ে পড়েছে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায়, তারপর সমগ্র ভারতে। আধুনিক বাংলা সাহিত্যে ‘প্রথম আলো’ পাঠকচিত্ত জয় করেছে কবেই, কালজয়ের সামর্থ্যেও সে বলীয়ান।




Friday, November 8, 2024

সেই সময় - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

এই সেই সময় যখন কলকাতার বাবুসমাজ সুরা, নারী ও বুলবুলি-বিলাসে মগ্ন, যখন নব্যশিক্ষিত যুবকেরা প্রাণপণে ইংরেজ-অনুকরণে মত্ত, গ্রাম নিঃস্ব করে প্রজাশোষণের অর্থে চলেছে সংস্কৃতি চর্চা, সমাজ ও ধর্মসংস্কার, তরুণ বিদ্যাসাগর রাত্রি জেগে রেড়ির তেলের আলোয় রচনা করছেন বাংলা গদ্যভাষা, জেগে উঠছে মধ্যবিত্ত শ্রেণী, এই সেই সময়...


হ্যাঁ, একটি বিশেষ সময়ই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এই সুকীর্তিত উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র। তিনি নিজেও এ-উপন্যাস সম্পর্কে লিখতে গিয়ে বলেছেন: "আমার কাহিনীর পটভূমিকা ১৮৪০ থেকে ১৮৭০ খ্রীষ্টাব্দ। এবং এই কাহিনীর মূল নায়কের নাম সময়।" লিখেছেন, "সময়কে রক্ত-মাংসে জীবিত করতে হলে অন্তত একটি প্রতীক চরিত্র গ্রহণ করতে হয়। নবীনকুমার সেই সময়ের প্রতীক। তার জন্মকাহিনী থেকে তার জীবনের নানা ঘটনার বৈপরীত্য, শেষ দিকে এক অচেনা যুবতীর মধ্যে মার্তৃরূপ দর্শন এবং অদ্ভুত ধরনের মৃত্যু, সবই যে সেই প্রতীকের ধারাবাহিকতা, আশা করি তা আর বিশদভাবে এখানে বলার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনীয় কথা শুধু এই যে, নবীনকুমারের চরিত্রে এক অকাল-মৃত অসাধারণ ঐতিহাসিক যুবকের কিছুটা আদল আছে। অন্য কোনো প্রসিদ্ধ পুরুষের নাম বা জীবনকাহিনী আমি বদল করিনি...."।


সত্যিই তাই। নাটকের শুরুতে যেমন দেওয়া থাকে পাত্রপাত্রীর নাম ও পরিচয়, তেমনভাবে এই বিপুল বর্ণাঢ্য উপন্যাসের গোড়াতেই যদি দেওয়া থাকত নবীনকুমারের সমকালীন চরিত্রাবলির নাম, বস্তুতই বিস্ময়কর মনে হত সেই তালিকা। মাইকেল, বিদ্যাসাগর, ডিরোজিও, হেয়ার সাহেব, দেবেন ঠাকুর—কে নেই! সমগ্র ঊনবিংশ শতাব্দীই যেন নানান চরিত্র হয়ে চোখের সামনে জীবন্ত।


যেটুকু তফাৎ তা হল, গবেষকের রচনায় প্রাণ থাকে না, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সেই প্রাণটি প্রতিষ্ঠা করেছেন।


এক দুরন্ত সময়ের জীবন্ত চলচ্চিত্র 'সেই সময়'। বঙ্কিম ও আকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত এই গ্রন্থের দুটি খণ্ডকে এক মলাটের মধ্যে এনে সম্পূর্ণ নতুন আকারে প্রকাশিত হল এই রাজসংস্করণ। এ-গ্রন্থের বিপুল সমাদর ও স্থায়ী কীর্তিমূল্যের কথা ম্ননে রেখে এ এক আনন্দ-শ্রদ্ধাঞ্জলি।




লোটাকম্বল - সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

'লোটাকম্বল' দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রকাশের সময় পাঠকবর্গ এক ভিন্নতর স্বাদের লেখায় আপ্লুত হয়েছিলেন। অজস্র পত্রে তাঁরা সেই আনন্দজ্ঞাপন করেছিলেন।


প্রথম পর্ব শেষ হবার পর অসংখ্য অনুরোধ এসেছিল অনুরূপ একটি দ্বিতীয় পর্ব অবিলম্বে শুরু করার। কেন লোটাকম্বল এত জনপ্রিয় হয়েছিল! কীসের গুণে? নিছক হাস্যরস অথবা অন্য কিছু?


বাংলাসাহিত্যে হাসির গল্প অনেক লেখা হয়েছে। হাসির উপন্যাস একটি কি দুটি। তা-ও সীমিত পৃষ্ঠাসংখ্যায়। সুবৃহৎ একটি হাসির উপন্যাস দীর্ঘধারাবাহিকতায় প্রকাশের অনন্য দৃষ্টান্ত পাঠক-অভিনন্দনের অন্যতম কারণ হলেও, ভাল-লাগার আসল রহস্য হল, লোটাকম্বল মূল্যবোধের উপন্যাস, মানুষের অন্তর্মনের আধ্যাত্মিক সংকটের উপন্যাস। ভেঙে যাওয়া যৌথ পরিবারের পটভূমিকায় দাড়িয়ে নিঃসঙ্গ এক প্রৌঢ়, হিমালয়ের মতো যাঁর ব্যক্তিত্ব, অসম্ভব যাঁর আদর্শ নিষ্ঠা, আপাত কঠোর যেন প্রুসিয়ান জেনারাল অথচ ভেতরে ভেতরে কুসুম-কোমল। আর সেই মানুষটির একমাত্র মাতৃহারা যুবক সন্তান, মাঝে দুই পুরুষের ব্যবধান। পূর্বপুরুষ উত্তরপুরুষে সঞ্চারিত করতে চায় জীবনের শ্রেষ্ঠ গুণ আর মূল্যবোধ। মানুষের মতো মানুষ করে তুলতে চায়। সেইশিক্ষা শুধু উপদেশের আকারে আসেনা, আসে ‘আপনি আচরিধর্ম’-এর পথ বেয়ে। 


দুই পুরুষের মূল্যবোধ আর দৃষ্টিভঙ্গির ঠোকাঠুকির মধ্যে আর এক পুরুষ। তিনি বৃদ্ধমাতামহ। আধ্যাত্মিকতার বাতিটি তুলে যিনি খুঁজে পেতে চান সেই চির-চাওয়া পরম পুরুষটিকে। সঞ্জীবের সার্থক সৃষ্টি এই দীর্ঘকাহিনী। হাসি, হিউমার, ঘাত-প্রতিঘাত, দুঃখ-সুখের টানাপোড়েনে তৈরি শাশ্বত জীবনবেদ




Thursday, November 7, 2024

গর্ভধারিনী - সমরেশ মজুমদার

এক দুঃসাহসী ও অভিনব বিষয়বস্তু নিয়ে, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবােধ নিয়ে নতুন পরীক্ষার ফলশ্রুতি এই গর্ভধারিণী উপন্যাস। অসম অর্থনৈতিক কাঠামােয় বড় হয়ে ওঠা চার বন্ধু, তাদের মধ্যে একজন নারী, এক সময়ে উপলব্ধি করল অদ্ভুত এক আঁধার নেমে এসেছে এই দেশে। কারও যেন নিজস্ব কোন দায় নেই, দেশটার ভালােমন্দের ইজারা রাজনৈতিক দলগুলির ওপর দিয়ে। অধিকাংশ মানুষ ঘরের নিরাপদ কোণ খুঁজছে। এই ক্লৈব্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চেয়েছে ঐ চারজন যুবক-যুবতী, পরিণামে তাদের আত্মগােপন করতে হলাে হিমালয়ের কোণে এক পাহাড়ী গ্রামে, যেখানে সভ্যতার নখ এখনাে আঁচড় কাটেনি। সেখানে শুরু হলাে তাদের একজনের, যে একমাত্র নারী তাদের দলে, তার-বিচিত্র আত্মত্যাগ ও সাধনা। এই উপন্যাস তাদের সকলের সেই স্বপ্ন, সাধনা ও সংগ্রামের কাহিনী। আশা করি সবারই ভালো লাগবে।




Wednesday, November 6, 2024

দূরবীন - শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

সাপ্তাহিক ‘দেশ’ পত্রিকায় দু-বছরেরও বেশি কাল ধরে ধারাবাহিকভাবে বেরিয়েছিল 'দূরবীন', শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের জোরালো, সংবেদনশীল কলমে অন্যতম মহৎ সৃষ্টি। চলমান শতাব্দীর দুইয়ের দশকের শেষ ভাগ থেকে শুরু করে আটের দশক পর্যন্ত বিস্তৃত সময়ের প্ৰেক্ষাপটে সামাজিক জীবনের যাবতীয় পরিবর্তনকে এক আশ্চর্য কৌতুহলকর বিশাল কাহিনীর মধ্য দিয়ে ধরে রাখার প্রয়াসেরই অভিনন্দিত ফলশ্রুতি 'দূরবীন' উপন্যাস।

তিন প্রজন্মের এই কাহিনীতে প্রথম প্রজন্মের প্রতিভূ জমিদার হেমকান্ত। এ-উপন্যাসের সূচনায় দেখা যায়, হেমকান্তের হাত থেকে কুয়োর বালতি জলে পড়ে গেছে, আর এই আপাততুচ্ছ ঘটনায় হেমকান্ত আক্রান্ত হচ্ছেন মৃত্যুচিন্তায়। বিপত্নীক হেমকান্ত ও রঙ্গময়ী নামের প্রবল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক পুরোহিত্যকন্যার, গোপন প্রণয়কাহিনী ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য পারিবারিক কাহিনী নিয়ে এ-উপন্যাসের প্রথম পর্যায়। 

দ্বিতীয় প্রজন্মের নায়ক কৃষ্ণকান্ত। দেবোপম রূপ ও কঠোর চরিত্রবল বালক কৃষ্ণকান্তকে দাঁড় করিয়েছে পিতা হেমকাস্তের বিপরীত মেরুতে। স্বদেশী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ কৃষ্ণকাস্তের ব্ৰহ্মচর্য-গ্রহণ ও দেশভাগের পর তাঁর আমূল পরিবর্তন-এই নিয়ে এ-উপন্যাসের দ্বিতীয় পর্য়ায়ের কাহিনী।


তৃতীয় ও শেষ প্রজন্মের নায়ক ধ্রুব, বিশ শতকের উপান্তপর্বে এক দিগভ্ৰষ্ট, উদ্ধত বিদ্রোহী যুবা। ধ্রুবর স্ত্রী রেমি, যার সঙ্গে এক অদ্ভুত সম্পর্ক তার। কখনও ভালবাসা, কখনও উপেক্ষা, কখনও-বা প্রবল বিরাগ। অথচ রেমির ভালোবাসা শাত-আঘাতেও অবিচল। একদিকে রেমির সঙ্গে সম্পর্ক অন্যদিকে পিতা কৃষ্ণকাস্তের মধ্যে সেই ব্ৰহ্মচারী ও স্বদেশের জন্য উৎসর্গীকৃত প্রাণসত্তাটিকে খুঁজে না-পাওয়ার ব্যর্থতায় ক্ষতবিক্ষত ধ্রুবর আশ্চর্য কাহিনী নিয়েই শেষ পর্ব। 

শুধু তিন প্রজন্মের তিন নায়কের ব্যক্তিগত কাহিনীর জন্যই নয়, এ-উপন্যাসের বিশাল প্রেক্ষাপটে আরও বহু বিচিত্র ও কৌতুহলকর শাখা-কাহিনী, এবং এর চালচিত্রে স্বদেশী আন্দোলন, দেশভাগ ও স্বাধীনতা পরবর্তী উত্তাল দিনরাত্রির এক তাৎপর্যময় উপস্থাপনার জন্যও ‘দূরবীন’ চিহ্নিত হবে অবিস্মরণীয় সৃষ্টিরূপে।

শুধুদূরকেই কাছে আনে না, উল্টো করে ধরলে কাছের জিনিসও দূরে দেখায় দূরবীন। ‘দূরবীন’ উপন্যাসের নামকরণে যেমন সূক্ষ্মতা, রচনারীতিতেও তেমনই অভিনবত্ব এনেছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। দ্বিস্তর এই উপন্যাসে সেকাল ও একাল, অতীত ও বর্তমান এক অনন্য কৌশলে একাকার।




Tuesday, November 5, 2024

কঙ্কাবতী - ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়

দারিদ্রের সঙ্গে কঠোর সংগ্রাম করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ত্রৈলোক্যনাথ সাহিত্যচর্চায় এসে পরিচিতি লাভ করেন রঙ্গ ব্যাঙ্গের একজন সার্থক স্রষ্ঠা রূপে। সমকালীন লেখকদের মতো সামাজিক উপন্যাস বা শুধুমাত্র বাস্তববাদী উপন্যাস না লিখে একি সাথে হাস্য রসের মাধ্যমে বিদ্রূপের তীর যেমন ছুঁড়েছেন তেমনি তার লেখায় উপস্থিত করেছেন ভূত প্রেত আর কাল্পনিক দৈত্য দানো। বাস্তব এবং কল্পনার মিশেলে অদ্ভুত এক মায়াজাল সৃষ্টি করে ত্রৈলোক্যনাথ পাঠককে আটকে রাখেন বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মাঝামাঝি। বলা হয়ে থাকে তার এক পা ছিল বাস্তবে আর আরেক পা কল্পলোকে, তার প্রথম উপন্যাস কঙ্কাবতী(১৮৯২) কে নিজেই আখ্যায়িত করেছেন ‘উপকথার উপন্যাস’ বলে।


কঙ্কাবতী সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের উক্তি, “এইরূপ অদ্ভুত রূপকথা ভাল করিয়া লেখা বিশেষ ক্ষমতার কাজ। ...এতদিন পরে বাঙ্গালায় এমন লেখকের অভ্যুদয়...যাঁহার লেখা আমাদের দেশের বালক বালিকাদের এবং তাঁদের পিতামাতার মনোরঞ্জন করিতে পারিবে”।


উপকথার উপন্যাস কঙ্কাবতীতে লেখক কঙ্কাবতীকে নিয়ে আসেন রূপকথার জগত থেকে, কঙ্কাবতীর ভাই একটি আম এনে ঘরে রেখে বলল, যে এই আম খাবে আমি তাকেই বিয়ে করবো। ছেলেমানুষ কঙ্কাবতী সে কথা না জেনেই একদিন আমটি খেয়ে ফেললো, আর ভাই তখন তাকেই বিয়ে করবে বলে ঘোষণা দিলো। লজ্জায় অন্য কোন উপায় না পেয়ে কঙ্কাবতী নৌকা ভাসাল খিড়কি পুকুরের মাঝখানে আর রূপকথার এই সূত্র ধরেই উপন্যাসের শুরু। শুরুর এই অংশটুকু ছাড়া প্রথম ভাগে রচিত হয়েছে বাস্তব জীবনের গল্প, যে গল্পে কুসুমঘাটী গ্রামের বংশজ ব্রাহ্মন তনু রায়। তিন মেয়ে আর এক ছেলের মধ্যে বড় দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, ছোট বাচ্চা মেয়ের নাম কঙ্কাবতী। মেয়েদের বিয়ে দেবার ব্যাপারে তনু রায়ের আবার পছন্দ ছিল একটু বয়স্ক জামাতা, ছোকরা জামাই গুলো একশত কি দুইশত টাকা দিয়াই বিবাহ করতে চায় বলে দুই মেয়েকে একটু বয়স্ক জামাই দেখেই হাজার টাকা গুনে বিয়ে দিয়েছেন, জামাইদের আর বয়স কতো? একজনের সত্তর আর আরেকজনের পঁচাত্তর। বাস্তব জীবনযাত্রার বাস্তব কিছু ঘটনা প্রবাহের মাঝেই লেখক তুলে এনেছেন মানুষের ভণ্ডামি, কুটিলতা আর নিষ্ঠুরতার কিছু চিত্র।


দ্বিতীয় ভাগে তিনি আমাদের নিয়ে যান রূপকথার রাজ্যে। কঙ্কাবতী নৌকা ভাসিয়েছে আর একে একে পুকুরপাড়ে এসে কঙ্কাবতীর বোন, ভাই, মা, বাবা ছন্দে ছন্দে কঙ্কাবতীকে ডাকছে আর কঙ্কাবতীর জবাবের সাথে সাথেই নৌকা একটু একটু করে মাঝ পুকুরে সরে যাচ্ছে, এই দিয়ে শুরু দ্বিতীয় ভাগ। দ্বিতীয় ভাগের রূপকথার গল্পে একে একে এসে হাজির হয় কাতলা মাছ, কাঁকড়া মহাশয়, ঝিনুক; আসে ভয়ঙ্কর দর্শন বাঘ, নাকেশ্বরী ভুতিনী, ঘ্যাঘো ভূত, ব্যাঙ সাহেব। মশা প্রজাতির মধ্যে কঙ্কাবতী খুঁজে পায় রক্তাবতীকে, দুইজন প্রানের বান্ধবী পাতিয়ে নাম দেয় ‘পচা জল’... মশার ছোট ভাই হাতি, খর্ব্বুর, খোক্কোশ, তাল পাতার সেপাই সহ আরো অনেকেই এসে উপস্থিত হয় গল্পের প্রয়োজনে। যখনি মনে হবে এতো শুধুই রূপকথা তখনি আবার ত্রৈলোক্যনাথ আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন বাস্তবে। রূপকথার ভূত প্রেত, অতি প্রাকৃত জীবজন্তুর কথা বলতে বলতেই তাদের সমাজ দর্শনের চিত্র তুলে ধরে ত্রৈলোক্যনাথ আঘাত হেনেছেন মানুষের সমাজের প্রচলিত নিয়ম কানুন আর বিধি নিষেধের উপর, বিদ্রূপ করেছেন তাদের যারা নিজেদের ইচ্ছা মতো বাণী কপচিয়ে শাস্ত্র বলে তাকে চালানোর চেষ্টা করে।


ত্রৈলোক্যনাথের বর্ণনা ভঙ্গী গল্প বলার মতো। সাধু ভাষায় লিখা হলেও সহজ, সরল, অনাড়ম্বর শব্দের ব্যবহারে মনে হবে সামনে বসিয়ে রেখে তিনি শ্রোতাকে গল্প শোনাচ্ছেন। কঙ্কাবতীর শেষে এসে বৈঠকি রীতিতেই ত্রৈলোক্যনাথ শেষ করে বলে গেছেন, তাহার পর? বার বার “তাহার পর তাহার পর” করিলে চলিবে না। দেখিতে দেখিতে পুস্তকখানা বৃহৎ হইয়া পড়িয়াছে। ইহার মূল্য দেয় কে তাহার ঠিক নাই, কাজেই তাড়াতাড়ি শেষ করিতে বাধ্য হইলাম।


তাহার পর কি হইলো? তাহার পর আমার গল্পটি ফুরাইলো। নোটে গাছটির কপালে যাহা লিখা ছিল, তাহাই ঘটিল।




Monday, December 12, 2022

শেরেবাংলা হইতে বংগবন্ধু - আবুল মনসুর আহমদ



 

গালিভরের সফরনামা - আবুল মনসুর আহমদ



 

স্বয়ম্বরা - আবুল ফজল



 

কাকলিমুখর - আবুল কালাম শামসুদ্দীন



 

অতীত দিনের স্মৃতি - আবুল কালাম শামসুদ্দীন



 

Sunday, December 11, 2022

সিকান্দার আবু জাফর রচনাবলী ০৩ - আবদুল মান্নান সৈয়দ সম্পাদিত



 

সিকান্দার আবু জাফর রচনাবলী ০২ - আবদুল মান্নান সৈয়দ সম্পাদিত



 

সিকান্দার আবু জাফর রচনাবলী ০১ - আবদুল মান্নান সৈয়দ সম্পাদিত

 



সত্যের মতো বদমাশ - আবদুল মান্নান সৈয়দ



 

সকল প্রশংসা তার - আবদুল মান্নান সৈয়দ